Posts

'অভিষেক' মাইকেল মধুসূদন দত্ত

১. অভিষেক কাব্যাংশে অবলম্বনে ইন্দ্রজিৎ চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। দত্তকুলোদ্ভব কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত  বীরত্বমূলক কাব্যাংশ 'অভিষেক'।'মেঘনাদবধ' কাব্যের প্রথম সর্গ থেকে সংকলিত কাব্যাংশটিতে  ইন্দ্রজিতের কিছু উল্লেখযোগ্য চরিত্র বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ১. কেন্দ্রীয় চরিত্র : কাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্র ইন্দ্রজিৎ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  পালন করেছে । ইন্দ্রজিৎকে কেন্দ্র করেই সম্পূর্ণ কাব্যাংশটি আবর্তিত হয়েছে। ২. বীরত্ব ও মর্যাদাবোধ : দুইবার রামচন্দ্র কে মেঘনাদ পরাজিত করেেছে, এতেই তার বীরত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। লঙ্কার বিপদের দিনে রামচন্দ্রের বিপক্ষে মেঘনাদ যুুদ্ধ করতে প্রস্তুত। তৃতীয়বার মেঘনাদ রামচন্দ্রকে পরাস্ত করার জন্য আত্মবিশ্বাসী।

প্রমথ চৌধুরী (বাংলা সাহিত্যের বীরবল)

প্রমথ চৌধুরী (১৮৬৮-১৯৪৬) (বাংলা সাহিত্যে প্রথম চলিত রীতির প্রবর্তক) জন্ম : ১৮৬৮ সালে ৭ই আগস্ট, যশোরে। পৈত্রিক নিবাস পাবনা। মৃত্যু :  ১৯৪৬ সালে ২রা সেপ্টেম্বর ৭২ বৎসর বয়সে কলকাতায়। পেশা : অধ্যাপক, কবি, প্রাবন্ধিক, লেখক। শিক্ষা ও কর্ম জীবন : প্রমথ চৌধুরীর শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ। কলকাতা হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাস করেন। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে এমএ পাস করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে খ্রিস্টাব্দে বিএ (অনার্স) দর্শন । বিশ্ববিদ্যালয়় থেকে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে  ইংরেজি বিষয়ে প্রথম শ্রেনিতে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিদেশে যান। বিদেশ থেকে ফিরে এসে কিছুকাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ছাড়াও সরকারি উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ঠাকুর এস্টেটের ম্যানেজার ছিলেন।  বাংল  সাহিত্য বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে "গিরিশ ঘোষ" বক্তৃতা দেন। ১৯৪১খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'জগত্তারিণী' পদক লাভ লাভ করেন।   সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা ইন্দিরা দেবী কে বিবাহ করেন। সেই সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাতুষ্পুত্রী জামাতা প্রমথ চৌধুরী। প...

প্রাচীন ও মধ্যযুগ

১. জয় দেবের জন্মস্থান সম্পর্কে লেখো। গীতগোবিন্দম্ কাব্যের রচয়িতা জয়দেব বীরভূম জেলার কেঁদুলী বা কেন্দুবিল্ব গ্রামে অজয় নদের তীরে জন্মগ্রহণ করেন। অনেকে মনে করেন ওড়িশার প্রাচী নদীর তীরে এই নামের একটি গ্রাম পাওয়া গেছে সেখানেও জয়দেবের জন্ম হতে পারে। ২. সদুক্তিকর্ণামৃত কে কোন সময় সংকলন করেন? লক্ষণ সেনের মহাসামন্ত চূড়ামণি বটু দাসের পুত্র শ্রীধর দাস ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে সদুক্তিকর্ণামৃত সংকলন করেন। এই গ্রন্থে ৪৮৫ জন কবির ২৩৭০ টি পদ সংকলিত হয়েছে। ৩. পদাবলী শব্দটি প্রথম কোথায় পাওয়া যায়? দ্বাদশ শতাব্দীতে পদাবলী শব্দটি প্রথম জয়দেবের গীতগোবিন্দম্ কাব্যে পাওয়া যায়। 'মধুর কোমলকান্ত পদাবলী' অংশ। তবে ষষ্ঠ শতাব্দীতে আচার্য দণ্ডী তার কাব্যাদর্শে সমুচ্চয় অর্থে পদাবলী শব্দের প্রয়োগ করেন---'শরীরং তাবদিষ্টার্থ ব্যবচ্ছিন্ন : পদাবলী'। ৪. প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের বর্গীকরণ করো। প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে গদ্যের কোন ভূমিকা ছিল না। যে কয়টি প্রধান ধারায় সেকালের সাহিত্য প্রবাহিত তার হল-ক) বৈষ্ণব সাহিত্য খ) অনুবাদ সাহিত্য গ) মঙ্গলকাব্য ঘ) ইসলামী সাহিত্য ঙ) প্রণয় সাহিত্য চ) ...

ইতিহাসাশ্রয়ী গাথাকাব্য : গঙ্গারাম সেনের লেখা 'মহারাষ্ট্র পুরাণ'

Image
মহারাষ্ট্র পুরাণ(বর্গী আক্রমনের মর্মান্তিক আখ্যান) আঠারো শতকে বাংলায় বর্গী আক্রমনের মর্মান্তিক আখ্যান বাস্তবসম্মতভাবে পরিবেশিত হয়েছে মহারাষ্ট্র পুরাণ কাব্যে। আবিষ্কার: সৌরভ পত্রিকার সম্পাদক কেদারনাথ মজুমদার ময়মনসিংহ জেলা থেকে কাব্যটি আবিষ্কার করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহের কৃষি-শিল্প প্রদর্শনীতে তুলে ধরেন। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ব্যোমকেশ মুস্তাফি কাব্যটি প্রকাশ করেন। কাব্যটি রচনা কাল:  ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে কবি গঙ্গারাম 'মহারাষ্ট্র পুরাণ' রচনা করেন। কবি পরিচয়:  ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহাকুমার বীরেশ্বর গ্রামে গঙ্গারাম জন্মগ্রহণ করেন। মুসলমান জমিদারের কাছে তাঁর কর্মজীবন অতিবাহিত হয়। জমিদারি কাজে মুর্শিদাবাদে নবাব মহলে যাওয়ার পথে তিনি বর্গী আক্রমন দেখেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বর্গী আক্রমনের বিবরণী সংগ্রহ করে তিনি 'মহারাষ্ট্র পুরাণ' কাব্যটি রচনা করেছেন। কাব্যটির বিষয়বস্তু: বর্গির আক্রমণের সাত আট বছর আগের ঘটনা নিয়ে কাব্যটির মূল বিষয়বস্তুুু রচিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম বর্গী আক্রমণ ঘটে ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে। এরপর ১৭৪৩ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৭৪৪ খ্রি...

'রূপনারানের কূলে'

🌸 "রূপনারানের কূলে জেগে উঠিলাম"---রূপনারান কী? কীভাবে কবি জাগরণ ঘটেছে? 🍀 বিশ্ববন্দিত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'শেষলেখা'(১৯৪১) কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত কবিতা 'রূপনারানের কূলে'। জীবন সায়াহ্নে উপনীত কবি বাস্তব জীবনের অসামান্য জীবন দর্শন উন্মোচিত করেছেন আলোচ্য কবিতায়। রূপনারান : আলোচ্য কবিতায় রূপনারান পার্থিব সৌন্দর্যময় বাস্তব জগতের প্রতীক। কবি সৌন্দর্যপূর্ণ বাস্তব জগতের দৃশ্যময় প্রাণ প্রবাহের চেতনালোকে নানান রূপেে কাটিয়েছেন। রূপময়় জগতের জীবনসুধাা তিনি উপভোগ করেছেন। রূপে-রসে-গন্ধে-বর্ণেে সমৃদ্ধ সেই বাস্তব জগৎকেই তিনি 'রূপনারান' নামেে অভিহিত করেছেন। বাস্তবের কঠিন জীবন : প্রবহমান জীবন নদীর কূলে কবির আত্মজাগরণ ঘটেছে। বহু বছর ধরে একান্ত উপলব্ধি দিয়ে মানুষের গভীরে প্রবেশ করেছেন, তাই কবির এই বাস্তব জগতের লীলাভূমি হয়ে উঠেছে 'রূপনারানের কূল'। চেতনার জাগরণ : জীবন অনন্ত প্রবহমান। সেেই প্রবাহে রয়েছে আশা আকাঙ্খার তরঙ্গমালা। ব্যঞ্জনাময় তরঙ্গমালার রূপ রক্তের মধ্য দিয়ে  কবির চেতনার জাগরণ ঘটেছে, খুঁজে পেয়েছেন আত্ম-স্বরূপ--                 ...

শক্তি চট্টোপাধ্যায়(ছদ্মনাম-রূপচাঁদ পক্ষী)

Image
🍁শক্তি চট্টোপাধ্যায়🍁  🍁জন্ম : ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে নভেম্বর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড়ুতে। মৃত্যু : ১৯৯৫ পিতা : বামানাথ চট্টোপাধ্যায়। মাতা : কমলাদেবী। 🍁 শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম কবিতা "যম" বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 🍁 ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন : রূপচাঁদ পক্ষী, স্ফুলিঙ্গ সমাদ্দার, শক্তিনাথ কাব্যতীর্থ, অভিনব গুপ্ত ইত্যাদি। 🍁 রূপচাঁদ পক্ষী ছদ্মনামে তিনি প্রথমদিকে কবিতা লিখতে শুরু করেন। স্কুলের গন্ডি অতিক্রম করার আগেই নবোদয় নামে একটি হাতে লেখা পত্রিকা বের করেছিলেন। 🍁 শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস "কুয়োতলা"।  উপন্যাসটি 1956 খ্রিস্টাব্দে লেখেন। প্রকাশিত হয় 1961 খ্রিস্টাব্দে। উপন্যাসটিতে নিরুপম নামে এক বালকের দক্ষিণবঙ্গের "বড়ু" নামে এক গ্রামে বড় হয়ে ওঠার কাহিনী লিপিবদ্ধ হয়েছে। 🍁 শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় মুদ্রিত কবিতা "জরাসন্ধ"। কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল বিষ্ণু দে সম্পাদিত "সাহিত্য পত্র" পত্রিকায়। 🍁 শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ হল "হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য"। ...

🌸বিনয় ঘোষ (ছদ্মনাম : 'কালপেঁচা')🌸 'পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি'র লেখক।

Image
বাংলা ভাষা ও লোকসংস্কৃতির গবেষক, সমাজতাত্ত্বিক, সাংবাদিক, সাহিত্য সমালোচক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন। 🌸জন্ম : ১৯১৭ সালে ১৪ ই জুন কলকাতার মনোহরপুকুরে জন্মগ্রহণ করেন। আদি নিবাস জেলার বনগাঁর গোয়াপাড়ায়।   🌸মৃত্যু : ৬৬ বৎসর বয়সে কলকাতায় ২৫ শে জুলাই ১৯৮০ সালে। 🌼পিতা-  বিশ্বেশ্বর ঘোষ।  🌼মাতা : সরসীবালা। বিশ্বেশ্বর ঘোষ ছিলেন নির্ভীক ও স্পষ্টবাদী মানুষ। তাই সামান্য কেরানিগিরি থেকে শুরু করে কর্মকুশল ও সততার পথে উন্নীত হন উচ্চতর পদে। মা ছিলেন স্নেহময়ী যা ছেলেকেই ঘিরে থাকতো। পিতার শাসন ও মায়ের স্নেহে বড় হয়ে উঠেছেন বিনয় ঘোষ। 🌸শিক্ষাজীবন :  বিনয়ের বিদ্যারম্ভ মনোহরপুকুরে নীরদ মাস্টারের পাঠশালায়। পরে ক্যাথিড্রাল স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং আশুতোষ কলেজ থেকে আইএ এবং বিএ পাশ করেন। তাঁর ছিল অর্থনীতিতে অনার্স। অনেকটা পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি (নৃতত্ত্ব) বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। তাঁকে নৃতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে উৎসাহ দেন প্রখ্যাত অধ্যাপক নীহাররঞ্জন রায়। বিনয় ঘোষ নিজেও চেয়েছিলেন নীহারবাবুর অধীনে গবেষণা করে পিএ...