ইতিহাসাশ্রয়ী গাথাকাব্য : গঙ্গারাম সেনের লেখা 'মহারাষ্ট্র পুরাণ'
মহারাষ্ট্র পুরাণ(বর্গী আক্রমনের মর্মান্তিক আখ্যান)
আঠারো শতকে বাংলায় বর্গী আক্রমনের মর্মান্তিক আখ্যান বাস্তবসম্মতভাবে পরিবেশিত হয়েছে মহারাষ্ট্র পুরাণ কাব্যে।
আবিষ্কার: সৌরভ পত্রিকার সম্পাদক কেদারনাথ মজুমদার ময়মনসিংহ জেলা থেকে কাব্যটি আবিষ্কার করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহের কৃষি-শিল্প প্রদর্শনীতে তুলে ধরেন। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ব্যোমকেশ মুস্তাফি কাব্যটি প্রকাশ করেন।
কাব্যটি রচনা কাল: ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে কবি গঙ্গারাম 'মহারাষ্ট্র পুরাণ' রচনা করেন।
কবি পরিচয়: ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহাকুমার বীরেশ্বর গ্রামে গঙ্গারাম জন্মগ্রহণ করেন। মুসলমান জমিদারের কাছে তাঁর কর্মজীবন অতিবাহিত হয়। জমিদারি কাজে মুর্শিদাবাদে নবাব মহলে যাওয়ার পথে তিনি বর্গী আক্রমন দেখেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বর্গী আক্রমনের বিবরণী সংগ্রহ করে তিনি 'মহারাষ্ট্র পুরাণ' কাব্যটি রচনা করেছেন।
কাব্যটির বিষয়বস্তু: বর্গির আক্রমণের সাত আট বছর আগের ঘটনা নিয়ে কাব্যটির মূল বিষয়বস্তুুু রচিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম বর্গী আক্রমণ ঘটে ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে। এরপর ১৭৪৩ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে আরও দুইবার বাংলাদেশ বর্গী আক্রমণ ঘটে। তবে দ্বিতীয়বারের আক্রমণ প্রসঙ্গে কবি কিছু জানাননি। কাব্যটি শুরুু হয়েছে পুরাণের আদর্শ অনুসরণ করে এবং শেষ হয়েছে পুরাণের আদর্শ অনুসারে। কাব্যটি ময়মনসিংহ জেলার ভাষা ব্যবহৃত হলেও রাঢ় অঞ্চলের ইতিহাস প্রত্যক্ষদর্শীর মত বর্ণিত হয়েছে। কাব্যের শুরুতে এবং শেষে মহাদেব-নন্দী-পার্বতীর পাপে ভরা পৃথিবীর কথা বিধৃত করেছেন বলে কাব্যের নাম 'মহারাষ্ট্র পুরাণ'।
Comments
Post a Comment